বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাজেট স্মার্টফোন LG Velvet 5G
LG Velvet 5G, ২০২১ সাল থেকে এলজি বাংলাদেশে অফিশিয়ালি ফোন বানানো বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও এলজি ভি ৬০ এবং LG Velvet 5G স্মার্ট দুইটা খুবই জনপ্রিয় এবং যে কারণেই আমি LG Velvet 5G ফোনটা রিভিউ করার চিন্তা করলাম। জানার আগ্রহ হলো বাংলাদেশে এই ফোনটি অফিসিয়ালি তৈরি করা বন্ধ হওয়ার পর কেন মানুষ এত পছন্দ করে এবং আসলে কি এমন আছে যে মানুষ এই ফোনটিকে এতো পছন্দ করছে।
LG Velvet 5G ফোনটা তে আপনি পাচ্ছেন ৬.৩ ইন্স সেন্ট্রিওল এর টাচ স্ক্রিন ডিসপ্লে যার সাইজটা অনেক বড়। এর উপরে পাচ্ছেন এ্যার ড্রপ নচ এবং সেখানে ৬৪ মেগাপিক্সেল একটা সেলফি ক্যামেরা এবং ডিসপ্লে টা নিচের দিকে আপনি পাচ্ছেন আন্ডার ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেটা মোটামুটি ফাস্ট। ফোনটার একদম উপরের দিকে একটি সাইলেন্স বাটন ইনস্টল করা আছে এবং তার পাশে একটি সিম ট্রে স্লট যেখানে আপনি দুইটা সিম বা একটা মাইক্রো এসডি কার্ড লাগাতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি যদি এইসডি কার্ড ব্যবহার করে তাহলে একটা সিম ব্যবহার করতে পারবেন। ফোনটার একদম নিচে আপনি পাচ্ছেন ১৮ ওয়াটের ফ্রাস্ট চার্জিং পোর্ট এবং সেই সাথে ফিমেইল ৩.৫ এর একটা হেডফোন জাক।
LG Velvet 5G ফোনটির ব্যাক এ আপনি পাচ্ছেন তিনটা ক্যামেরা সেনসর তার মধ্যে একটা ৪৮ মেগাপিক্সেল এর মেইন সেন্সর, একটা এইট মেগাপিক্সেল আল্ট্রা হোয়াইট সেন্সর আর একদম নিচে আপনি যেটা ভাবছেন সেটা ৫ মেগাপিক্সেলের ডেপ্থ সেন্সর যেটাতে পোর্ট্রেট তোলার জন্য হেল্প করে। আর পিছনের দিকে নিচের অংশে একটা এলজির লোগো। এই ফোনটার ফ্রেম অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি এবং এই ফোনটার ডান সাইডে আপনি পাচ্ছেন শুধুমাত্র একটা পাওয়ার বাটন এবং বাম সাইডে পাচ্ছেন ভলিউম বাটন এবং নিচে একটা ডেডিকেটেড বাটন আছে শুধুমাত্র গুগোল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর জন্য। এই বাটন টা আমার কাছে খুব বেশি ইউজফুল মনে হয়নি এটা যদি কাস্টমাইজ করা যেত তাহলে আমার কাছে ভালো লাগতো। যে কোন অ্যাপস যদি কাস্টমাইজ করে ওপেন করা যেত তাহলে খুবই ভালো হতো। কারন, গুগলকে আপনি কিন্তু হে গুগোল বলে অ্যাক্সেস করতে পারতেছেন তো সেই কারণে আমার মাথায় আসেনা যে গুগোল অ্যাসিস্টেট ব্যবহারের জন্য একটা ডেডিকেটেড বাটন দেওয়ার কি প্রয়োজন।
যদি LG Velvet 5G ফোনের ডিজাইনের কথা বলি তাহলে কিন্তু দেখতে পাচ্ছেন এটা ভেরিস্ট্রিম লেভেলের একটা ফোন। এই ফোনটার গ্লাস লুক সেই সাথে একটু লম্বা। বর্তমান সময়ে যেসব লম্বা ফোন হয়ে থাকে তার থেকেও এই ফোনটা একটু বেশি লম্বা। আমি প্রথমে যখন ফোনটা হাতে নিয়ে ছিলাম তখন আমি ভেবেছিলাম এত লম্বা ফোন আমি কিভাবে ইউজ করব। বাট, আমি দেখলাম যে দু চারদিন পরে ফোনটা আমার কাছে ভালোই হ্যান্ডিক্রাফট একটা ফোন লাগতেছে। এছাড়া ফোনটার ডিজাইন টা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।
এত বড় এবং ৬.১৮ ইন্স সাইজের ডিসপ্লের ফোন হওয়ার সত্যেও এটা কিন্তু ওয়ান হ্যান্ড ইউজ করতে কোন অসুভিধা হয় না। এই ফোনটার সব থেকে মজার ব্যাপার যেটা আমার কাছে লেগেছে, এত বড় ফোন হওয়া সত্যেও এই ফোনটার ওজন মাত্র ১৮০ গ্রাম । যে অনেক লাইটওয়েট মনে হয়। ফোনটা আমার কাছে, অভেরাল ডিজাইন ইজ ভেরি গুড একটা ফোন লেগেছে। বাট, ক্যামেরা বাবু আমার কাছে অত বেশি ভালো লাগে নাই। এটাকে যদি আমি রেটিং দেই ১০ এ ৭ দিবো।
ডিজাইন দেখলে মনে হয় এটা খুবই প্রিমিয়াম একটা ফোন। এই ফোনের প্রসেসর খুবি ভালো একটা প্রসেসর। স্কের টেস্টে এই প্রসেসর ৩৫৫৫ দিতে পারছে। যেটা ডেইলি লাইফ এ কাজ করার জন্য যথেষ্ট পাওয়ারফুল একটা প্রসেসর হিসেবে আমি মনে করি। সেই সাথে এই ফোনে সিক্স জিবি র্যাম ব্যহার করা হয়েছে। LG Velvet 5G ফোনের ইউআই আমার কাছে ফাংশনের দিক থেকে তেমন একটা ভালো না লাগলেও ভেরি লাইট ওয়েট এবং হ্যান্ডি স্মার্টফোন হওয়া আমার কাছে ভালোই লেগেছে। অনেকেটা সড়কে বিমানের ছোয়র মত।
এই ফোনটিতে আমি অনেক ধরনের সফটওয়্যার ইন্সটল করে এবং একসাথে চালিয়ে দেখেছি। মজার বিষয় হলো এই ফোনটিতে হাই refresh rate না থাকা সত্ত্বেও ডেলি লাইফ ইউজ করার সময় কোন লেগ বা বটল নেক অনুভব করিনি।
এছাড়া ডেলাইটে মাইন্ড ব্লোইং ছবি তোলা যায়। খুবই ভালো এবং কালারফুল ছবি তুলতে পারে সেই সাথে ডায়নামিক রেঞ্জার কিন্তু ভালো ক্যাপচার করতে পারে। ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স জুম করে ছবি গুলো মোটামুটি ভালই। এটার ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স টা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে । যদি আপনি নাইট মোডে রাতের বেলায় ছবি তুলতে যান তখন এই ফোনটা আপনাকে হতাশ করবে কারন এই ফোনটি লোলাইটে ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স ব্যাবহার করে ছবি তোলা হলে সেটা ভালো ছবি দিতে পারে না।
এছাড়াও এই ফোনটিতে আরো অনেক ফিচার রয়েছে যেগুলো আমার কাজে বলার মত তেমন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়নি তাই স্কিপ করলাম। আপনি যদি এই ফোনের সাথে অন্য ফোনের কন্ফারিজনের কথা বলেন তাহলে আমি Vivo V29 5G ফোনটির কথা বলবো। চাইলে ওই ফোনটির স্পেফিকেশন চেক করে দেখতে পারেন।